মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

চালুর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ফের বন্ধ সিইউএফএল, ‘কারিগরি ত্রুটি’

আনোয়ারা-কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি | প্রকাশিতঃ ৩ নভেম্বর ২০২৫ | ৭:৩৩ অপরাহ্ন


গ্যাস সংকটে সাড়ে ছয় মাস বন্ধ থাকার পর চালু হলেও ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ফের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল)।

রোববার ভোরে চট্টগ্রামের আনোয়ারার এই কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছিল; সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।

সিইউএফএলের উৎপাদন বিভাগীয় প্রধান উত্তম চৌধুরী বলেছেন, “দীর্ঘদিন পর উৎপাদন শুরু হওয়ায় এমন কারিগরি ত্রুটি হয়েছে। কারখানা আবারও স্টার্টআপে (কারখানা চালুপ্রক্রিয়া) আছে। আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে আবারও উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে সক্ষম হব।”

এর আগে গ্যাস সংকটের কারণে গত ১১ এপ্রিল কারখানাটিতে ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সাড়ে ছয় মাস পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে রোববার ভোরে কারখানটি পুরোদমে উৎপাদনে ফেরে।

কারখানা সূত্র জানিয়েছে, সিইউএফএল পুরোদমে চালু থাকলে দৈনিক ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে পারে। প্রতি মেট্রিক টন সার ৩৮ হাজার টাকা হিসাবে কারখানাটিতে দৈনিক ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার সার উৎপাদিত হয়।

কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, কয়েক বছর ধরেই যান্ত্রিক ত্রুটি বা গ্যাস সংকটে দীর্ঘ সময় ধরে বারবার বন্ধ থাকছে কারখানাটি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সিইউএফএল চালু ছিল মাত্র পাঁচ দিন।

গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি বন্ধ হওয়ার পর টানা ১০ মাস পর গত ১৩ অক্টোবর এটি চালু হয়েছিল। কিন্তু এ বছরের ৩ জানুয়ারি ফের যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়লে তা সারাতে দীর্ঘ সময় লাগে। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে চালু হলেও ১১ এপ্রিল গ্যাস সংকটে তা ফের বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় এই সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরুতে দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন ক্ষমতা থাকলেও তা কমে বর্তমানে ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টনে নেমেছে।

সিইউএফএল সূত্র জানায়, সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এই কারখানায় পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন।

কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে বছরে ইউরিয়া সারের চাহিদা প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন করে। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়।