বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

রোহিঙ্গা সুরক্ষায় এমপি বাদলের প্রস্তাবটিই আন্তর্জাতিকভাবে এগোচ্ছে

| প্রকাশিতঃ ৫ নভেম্বর ২০১৭ | ৮:২৫ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম : রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মঈন উদ্দিন খান বাদল এমপি’র সংসদে দেয়া প্রস্তাবটিই এগিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে। সংসদে প্রস্তাবটি গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। একুশে পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বলার সময় এই তথ্য জানিয়েছেন মঈন উদ্দিন খান বাদল।

রোহিঙ্গাদের ফেরৎ পাঠানোর পর তাদের যেন জীবনের গ্যারান্টি থাকে, সেজন্য জাসদ একাংশের কার্যকরী কমিটির সভাপতি মাঈন উদ্দিন খান বাদল সংসদে প্রস্তাব করেছিলেন আরাকানের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের একটি ‘সেফজোন’ প্রতিষ্ঠার। সেই প্রস্তাবটি একুশে পত্রিকার কাছে পুনরোল্লেখ করেন এমপি বাদল।

তিনি বলেন, সংসদে স্পীকারকে বলেছিলাম, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান আপনি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে, আরাকানের অভ্যন্তরে ‘সেফ জোন’ প্রতিষ্ঠা করেন জাতিসংঘের অধীনে। এটি করা হয়েছে কসোবোতে। কসোবোর মুসলমানদের রক্ষার জন্য জোগোস্লোভিয়ার একটি অংশ বের করে তাদেরকে বাঁচিয়েছেন। একই প্রচেষ্টা আমরা দেখেছি প্যালেস্টাইনে। গাজা বলে একটি এলাকা এখনো পর্যন্ত আন্তর্জাতিক রক্ষাকবচের অধীনে অবস্থান করছে প্যালেস্টাইন জনগণকে রক্ষার জন্য। জাতিসংঘ একমুখে বলছে, রোহিঙ্গাস আর দ্যা মোস্ট পারসিকিউটেড পিপল ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড। সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে অত্যাচারিত জনগোষ্ঠী। এই অত্যাচারিত জনগোষ্ঠীর জন্য আপনারা আরাকানের অভ্যন্তরে একটা স্থান নির্ধারণ করে সেখানে তাদেরকে রাখবেন। সেখানে তারা বেঁচে থাকার গ্যারান্টি পাবে।’

মাঈন উদ্দিন খান বাদল বলেন, আমি পণ্ডিতদের মুখে টিয়াপাখির স্লোকের মুখের মতো শুনি- তাদেরকে ফেরত নিতে হবে, তাদেরকে নিরাপত্তা দিতে হবে। তাদেরকে ফেরত নিয়ে দুদিন পর আবার লাথি মেরে বের করে দিলে তখন আপনার কী বক্তব্য হবে। এই কাজটি তো গত ৩০ বছর ধরে করছে তারা। নিয়ে যায়, আবার ফেরত দেয়। মুখে তাদের নিরাপত্তার কথা বলছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, তাদের পুরো এলাকাটা জ্বলে গেছে। তাদের বাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য অনেককিছু জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হুয়াট ইউ আর আসকিং, কোথায় যাবে তারা?- বলেন প্রবীণ এ নেতা।

মাঈন উদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘এই সংসদেই রোহিঙ্গাদের জঙ্গী, সন্ত্রাসী বলা হয়েছে। আমি সাথে সাথে এর প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, মাননীয় স্পিকার আপনার সামনে যখন আপনার মাকে বলাৎকার করা হয়, আপনার সামনে যখন আপনার কন্যাকে বলাৎকার করা হয়, আপনার শিশুকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়, তখন আপনি কী করবেন। তখন অস্ত্র হাতে নেওয়া আপনার জন্ম জন্মান্তরের অধিকার। আপনি পট করে জঙ্গী বলেন কেন? হু আর ইউ ডিসাইডেট দ্যাট- তারা জঙ্গী। একাত্তরে যখন আমরা অস্ত্র হাতে নিয়েছিলাম তখন আমাকে, আমার বন্ধুকে দুষ্কৃতকারী ডাকা হয়নাই, সন্ত্রাসী বলা হয়নাই? ওটা ইতিহাসকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশের পার্লামেন্টে আপনি কাউকে জঙ্গী ডাকতে পারেন না। দিস ইজ মাই স্টেটমেন্ট।’

বাদল বলেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশী যে সংসদে আমার প্রস্তাবটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন। এবং তিনি সেটা জাতিসংঘে উত্থাপন করেছেন। সে কারণে বলছি, মানবিক কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে যে জায়গা দিয়েছেন এটা অবিস্মরণীয়। এলাকাগতভাবে একটি ছোট দেশের নেত্রী বিশাল হৃদয়ের পরিচয় দিয়েছেন। আমরা বিশ্বের মোড়লদেরকে দেখেছি, ১৭-১৮ হাজার লোক নিতে চায় না। সুতরাং সেখানে ওয়ান মিলিয়ন, দিস ইজ অ্যা ভেরি বিগ কোয়েসশান।’

‘আমি কয়দিন আগেও রাশিয়া ছিলাম। সেন্ট পিটার্সবার্গে আইপিইউ-ইন্টার পার্লামেন্টারিয়ান ইউনিয়নে অনেক বিতর্কের পর এই ইস্যুটা আলোচিত হয়েছে এবং পাশ হয়েছে। এই ইস্যুর পক্ষে আমরা ভোট পেয়েছি ১০২৭। মিয়ানমার অপোস করেছে তাদের সর্বশক্তি দিয়ে। তারা পেয়েছে ৪৭ ভোট। সো, দ্যা ওয়ার্ল্ড হ্যাজ একসেপটেড আওয়ার প্রপোজিশন। দ্যা রোহিঙ্গা ইজ অ্যা ভেরি ইমপরটেন্ট ইস্যু অ্যান্ড শুড বি হ্যান্ডেল ভেরি কুইকলি।’ যোগ করেন জাতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা।

[চলবে]

# কালুরঘাট সেতু নিয়ে নিন্দুকদের জবাব দিলেন বাদল, বললেন এই আমলেই কাজের সূচনা
# মহিউদ্দিনের সমালোচনায় গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকলে তাতে অন্যায় নেই : গৃহকর ইস্যুতে বাদল
# আমার রক্ত কি পানির দামে বিক্রি হবে-প্রশ্ন এমপি বাদলের