মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা এ বছর অর্ধেকে নামানোর নির্দেশ ড. ইউনূসের

একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ১৪ মে ২০২৫ | ৫:২৫ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা চলতি বর্ষা মৌসুমে আগের তুলনায় অর্ধেকে এবং ক্রমান্বয়ে শূন্যে নামিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে ‘চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসন’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন উদ্যোগ ও অভিজ্ঞতার কথা শোনেন প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা অনেক রকম তাত্ত্বিক আলোচনা করেছি। সেসব আর করতে চাই না, আমরা চাই জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে চিরতরে বের হয়ে আসতে। কিন্তু সেটা একবারেই হবে না, তাই আমাদের ক্রমান্বয়ে অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।”

চলতি বর্ষা মৌসুম ইতিমধ্যে শুরু হওয়ায় এ বছর সমস্যাটির পুরোপুরি সমাধান সম্ভব না হলেও গত কয়েক মাসে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার আশানুরূপ ফল দেখতে চান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যদি এ বছর আশানুরূপ ফল না আসে তাহলে তো সব কিছু মনে হবে জলে গেল।”
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক অর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে একটি প্রতীকী সমস্যা এবং খুবই জটিল সমস্যা। এই সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে অন্যান্য শহর ও জেলা উৎসাহিত হবে, তাই চট্টগ্রামকে এই কাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে হবে।”

এই সমস্যা সমাধানে নিয়মিত তাগিদ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে ড. ইউনূস আরও বলেন, “চট্টগ্রাম শহরের যে সক্ষমতা রয়েছে অন্য অনেক শহরের সেই সক্ষমতা নেই। তাই চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় হতে হবে এবং নাগরিক সমাজকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।”

সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “মূলত প্রধান উপদেষ্টা জানতে চেয়েছিলেন, আমরা যে এত কাজ করেছি, এবার কত শতাংশ জলাবদ্ধতার হাত থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে পারব? এটা কি ২০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ নাকি ৪০ শতাংশ, না ৫০ শতাংশ? আমি বলেছি, আমি ১০০ শতাংশ বলব না, ইনশাল্লাহ ৫০ শতাংশ।”

সভায় জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের বরাদ্দ পেতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এছাড়া অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের যানজট নিরসন এবং সার্বিক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়।

মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি. আর. আবরার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক নুরজাহান বেগম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) কাজী ফারুক-উজ-জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।