মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একুশে পত্রিকায় সংবাদের পর সেই ‘জাল ব্যবসায়ী’ এসআই রুবেল ক্লোজড

জেলেদের জাল কেড়ে টাকা আদায় ও মাসিক চাঁদা দাবির অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন এসআই রুবেল মজুমদার। একুশে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এলো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি | প্রকাশিতঃ ১৯ মে ২০২৫ | ১০:৪০ অপরাহ্ন


একুশে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে অভিযুক্ত নৌপুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুবেল মজুমদারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সাঙ্গু নদীতে জেলেদের জাল কেড়ে নিয়ে সেটি আবার তাদের কাছেই টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা, মাসিক চাঁদা দাবি এবং হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত এসআই রুবেল মজুমদারকে নৌপুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চল অফিসে ক্লোজ (প্রত্যাহার) করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১৯ মে) রাত ১০টা ২৪ মিনিটে নৌপুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) আ.ফ.ম নিজাম উদ্দিন একুশে পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে এসআই রুবেল মজুমদারকে তার বর্তমান কর্মস্থল আনোয়ারার বার আউলিয়া ঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম অঞ্চল অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে আজ (সোমবার) একুশে পত্রিকায় “সাঙ্গু নদীতে নৌপুলিশের এসআইয়ের ‘জাল বাণিজ্য’, দিশেহারা গরিব জেলেরা” এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে এসআই রুবেল মজুমদারের বিরুদ্ধে আনোয়ারার বারখাইন ও বরুমচড়া ইউনিয়নের জেলে গ্রহ নাথ জলদাশ ও প্রভাব জলদাশের করা লিখিত অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছিল, এসআই রুবেল ও তার দলবল জেলেদের জাল কেড়ে নিয়ে যান এবং পরে সেই জাল টাকার বিনিময়ে ফেরত দেন। এমনকি, চার জেলেকে বিনা কারণে ধরে নিয়ে দুইদিন হাজতবাস করানো এবং পরবর্তীতে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ০১৮৫৫-৯৬৬৭৩৩ নম্বর থেকে ফোন করে এসআই রুবেল মাসিক ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

একুশে পত্রিকার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত এসআই রুবেল মজুমদার বিষয়টি এক প্রকার স্বীকার করে বলেছিলেন, “বিষয়টি আসলে মৎস্য অফিসের লোকজন বড় করে ফেলেছে। আমাদের বললে তো হতো, ওইদিকে যেতাম না আমরা… আমরা তো..! ভাগেযোগে চলতাম।” তার এই বক্তব্য সংবলিত সংবাদ প্রকাশের পরই নৌপুলিশ প্রশাসনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

নৌপুলিশের এসপি আ.ফ.ম নিজাম উদ্দিন একুশে পত্রিকাকে আরও জানান, “অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে। এসআই রুবেলের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে এবং তদন্তে চূড়ান্তভাবে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

একুশে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর পরই এমন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা আশা করছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত কর্মকর্তা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবেন এবং ভবিষ্যতে অন্য কোনো কর্মকর্তা এমন ন্যক্কারজনক কাজে লিপ্ত হতে সাহস পাবেন না।

এই ঘটনা গণমাধ্যমের নজরদারির গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণ করল।