
আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মূল্যস্ফীতি কমে এলে ব্যাংক ঋণের সুদের হারও কমানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর তার এই প্রত্যাশার কথা জানান।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এক্সচেঞ্জ রেট বা মুদ্রা বিনিময় হার। এটি স্থিতিশীল করা না গেলে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়ত। তবে এখন এটি একটি স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে এসেছে। বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরও তেমন বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। এতে বাজারে আস্থা ফিরেছে এবং এটি ইঙ্গিত দেয় যে মূল্যস্ফীতি একটি ভালো দিকে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি পরিসংখ্যান দেখি, খাদ্য মূল্যস্ফীতি যেখানে সাড়ে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল, তা এখন কমে সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেশি থাকলেও সেটিও কমছে এবং এখন ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য এবং তেল-গ্যাসের দামও কমতির দিকে, যার সুফল আমরা পাব। এছাড়া, আমরা সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করেছি। সব মিলিয়ে আশা করছি, আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে।”
গতকাল সোমবার (২ জুন) বিকেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি এবং অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাসের ঘটনা। এই বাজেট উপস্থাপনের পরদিনই আজ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য, বিমান এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধান এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।