
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যা হতে পারে দুই দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও কাঁচামাল আমদানির খরচ বৃদ্ধিকে প্রবৃদ্ধি কমার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগ গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। মূলধনি পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ায় দেশের শিল্পোৎপাদনে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।
তবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দুই অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে। এর মধ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
এর আগে কেবল ২০১৯-২০ অর্থবছরে মহামারির প্রভাবে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছিল। সেই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বাদ দিলে ২০০১-০২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের এই পূর্বাভাসের সঙ্গে অবশ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যের কিছুটা তফাৎ রয়েছে। বিবিএস জানিয়েছে, চলতি অর্থবছর শেষে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে কয়েক দফা সুদের হার বাড়ানো হলেও মূল্যস্ফীতি এখনও লক্ষ্যমাত্রার নিচে নামেনি। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি ও ব্যবসাবান্ধব সংস্কার কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে বিনিয়োগের প্রবাহ আবারও জোরালো হতে পারে।
প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়, ২০২৫ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে এ অঞ্চলে মাথাপিছু আয়ের গড় প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে স্থির থাকতে পারে, যা দারিদ্র্য কমাতে সহায়তা করবে। তবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার করোনা-পূর্ববর্তী দশকের চেয়ে কম থাকবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। ফলে এসব দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের গতি আগের চেয়ে ধীর হতে পারে।