বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

ইতিহাসে প্রথমবার ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল প্রবাসী আয়

রিজার্ভ ৩১ বিলিয়নের উপরে
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ৩০ জুন ২০২৫ | ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক অর্থবছরে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণের প্রবাহ বাড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ২৮ জুন পর্যন্ত ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বেশি।

এই রেকর্ডের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দুই কিস্তিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর দেওয়া ঋণের অর্থ যোগ হওয়ায় দেশের রিজার্ভেও বড় উল্লম্ফন ঘটেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বৃহস্পতিবার দিন শেষে দেশের মোট বা গ্রোস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার এবং ব্যবহারযোগ্য নিট রিজার্ভ ২০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার।

আরিফ হোসেন খান বলেন, “গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি শুরু হয়েছিল, সেটি এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রবাসীরা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স পাঠানোর কারণে আমরা ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় সুসংবাদ।”

তিনি আরও জানান, গত এক সপ্তাহে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি ও জাইকাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণসহায়তা আসায় রিজার্ভের পরিমাণ এতটা বেড়েছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান মনে করেন, দেশ থেকে টাকা পাচারের পথ সংকুচিত হয়ে আসায় বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে টাকা পাচারের পথ অনেকটাই সংকুচিত হওয়ায় বিদেশে হুন্ডির চাহিদা কমে গেছে। এ কারণেই বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহে এই উল্লম্ফন আমরা দেখছি।”

উল্লেখ্য, ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো রিজার্ভ দুই বছরের মধ্যে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে রিজার্ভ আবার ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে।