বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

ব্র্যাককে ৪০৪ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ

| প্রকাশিতঃ ৩ অগাস্ট ২০১৬ | ২:৩৬ অপরাহ্ন

courtঢাকা: ৪০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা বকেয়া কর পরিশোধে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাককে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি এই কর ফাঁকি দিয়েছিল সংস্থাটি। বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ এই রায় দেয়।

মামলার নথিপত ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৯৪-৯৫ থেকে ২০০৫-০৬ সাল পর্যন্ত মোট ১১টি কর বর্ষে সরকারকে কোনো আয়কর দেয়নি ব্র্যাক। আদালতের নথি অনুযায়ী সংস্থাটি ১৯৯৪-৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর যথাক্রমে ১৯ কোটি ২৭ লাখ, ৩৯ কোটি ২৯ লাখ, ৪০ কোটি ৬২ লাখ, ৫০ কোটি ১৯ লাখ, ৬৬ কোটি ৬৮ লাখ, ১৯ কোটি ৫৭ লাখ, ৬৮ কোটি ৩১ লাখ, ৪৫ কোটি ৪৩ লাখ, ২১ কোটি, ২১ কোটি ৫৫ লাখ ও ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা আয়কর ফাঁকি দিয়েছে।

ব্র্যাকের দাবি অনুযায়ী তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে বৃহত্তর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতায়নের অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। ১৯৭২ সালে ব্র্যাক তার যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এর ১ লক্ষ ২০ হাজার কর্মী বিশ্বব্যাপী ১১টি দেশে কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে।

ব্র্যাকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইকে বলা হয়েছে জনগোষ্ঠীভিত্তিক ব্র্যাকের বিভিন্ন উদ্ভাবন: যেমন ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, আইনসহায়তা, সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ, জীবিকা সংস্থান, অতিদরিদ্রদেরকে সম্পদ হস্তান্তর, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ প্রভৃতির মাধ্যমে সমাজের অধিকারবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের সুপ্ত সম্ভাবনা বিকাশের পথ খুঁজে পেয়েছে। এর বেশ কিছু কর্মসূচিতে মুনাফা করে সংস্থাটি। আর এই মুনাফা থেকে কর পরিশোধে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল সংস্থাটিকে।

সব মিলিয়ে ১১ কর বছরে ৪০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিশোধে ঢাকার উপ কর কমিশনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটিকে নির্দেশ দেন। ব্র্যাক এই আদেশের বিরুদ্ধে ট্যাক্সেস অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে আদালত কর পরিশোধের আদেশ বহাল রাখে। এই আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে যায় ব্র্যাক হাইকোর্টে আবেদন করে। আর হাইকোর্ট ব্র্যাককে জনহিতকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে কর টাকা পরিশোধের দায় থেকে অব্যাহতি দেয়।

পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে কর বিভাগ। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার আপিল বিভাগ ব্র্যাককে দাবি করা কর পরিশোধের নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

এই মামলায় ব্র্যাকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাশেদ জাহাঙ্গীর। ঢাকাটাইমসকে তিনি জানান, সর্বোচ্চ আদালত আদেশে বলেছে, ‘জনহিতকর প্রতিষ্ঠান হলেও ব্র্যাক ব্যবসা করে এবং এ ক্ষেত্রে আয়কর দিতে হবে।’

রাশেদ জাহাঙ্গীর বলেন, আদালতে আদেশ দেয়ায় ব্র্যাককে এখন এই টাকা পরিশোধ করতেই হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্টি জেনারেল ঢাকাটাইমসকে বলেন, টাকা পরিশোধে আদালত কোনো সময়সীমা বা প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট করে দেয়নি আদালত।

এ বিষয়ে ব্র্যাকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে ঢাকাটাইমসকে জানানো হয়, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।